কুরআন নিয়ে ছন্দ, কবিতা এবং হাদিস

অনেক বাছাইকৃত কুরআন নিয়ে ছন্দ – কুরআন নিয়ে কবিতা – কুরআন নিয়ে হাদিস জানতে চাইলে আজকের আর্টিকেল পুরোটা পড়তে থাকুন। আশা করি এখান থেকে আপনি খুব ভালো ভালো কুরআন নিয়ে ছন্দ – কুরআন নিয়ে কবিতা – কুরআন নিয়ে হাদিস পাবেন ইনশাল্লাহ,
কুরআন নিয়ে ছন্দ
কুরআন নিয়ে কবিতা
কবিতা ১:
আলোর পথিক
কুরআনের বাণী আলো ছড়ায়,
অন্ধকারে পথিকের আশা হয়।
আল্লাহর বাণী হৃদয়ে ধারণ,
জীবনের পথে চলা সহজ হয়।
কবিতা ২:
আসমানী বার্তা
আকাশের বাণী মাটির মানুষে,
নামল কুরআনের আয়াতে।
আল্লাহর দয়ার অমৃতধারা,
বইছে পৃথিবীর প্রতিটি কোণাতে।
কবিতা ৩:
নিঃশব্দে কথা বলে
কুরআনের প্রতিটি শব্দে,
নিঃশব্দে কথা বলে সত্যের সুর।
হৃদয়ে আলোড়ন তোলে,
মুছে দেয় সকল বিভ্রান্তির দূর।
কবিতা ৪:
আশ্রয়স্থল
কষ্টের সময়ে কুরআনের ছায়া,
হৃদয়ে এনে দেয় শান্তির বারতা।
আল্লাহর নূরে আলোকিত জীবন,
কুরআনেই খুঁজে পাই আত্মার মুক্তি।
কবিতা ৫:
চিরন্তন সত্য
কুরআনের বাণী চিরন্তন সত্য,
মিথ্যার অন্ধকারে আলো জ্বালে।
মানবতার পথে চলার দিশা,
এই পবিত্র গ্রন্থেই সব মেলে।
কবিতা ৬:
শান্তির প্রার্থনা
কুরআনের প্রতিটি আয়াত,
শান্তির প্রার্থনা, জীবনের পথ।
আল্লাহর নিকট নিবেদিত অন্তর,
এই গ্রন্থেই খুঁজে পায় সকল মাধুর্য।
কবিতা ৭:
আলোর বাহক
কুরআন আলোর বাহক হয়ে,
নামল পৃথিবীর প্রতিটি কোণ।
আল্লাহর বাণী, সত্যের স্বাক্ষী,
হৃদয়ে বয়ে আনে অনন্ত ধ্বনি।
কবিতা ৮:
নূরের জ্যোতি
কুরআনের নূরের জ্যোতি,
হৃদয়ে ছড়ায় শুদ্ধতার রশ্মি।
আল্লাহর পথ দেখায় যে গ্রন্থ,
তার প্রতিটি আয়াতে লুকিয়ে শান্তির গান।
কবিতা ৯:
বিশ্বাসের আলো
কুরআন আমাদের জীবনের বাতি,
বিশ্বাসের আলোয় আলোকিত।
আল্লাহর দয়ার অমৃতধারা,
এই গ্রন্থেই পাই জীবনের সুখ।
কবিতা ১০:
মুক্তির দ্বার
কুরআনের আয়াতে লুকিয়ে মুক্তির দ্বার,
আল্লাহর রহমত বয়ে আনে ধ্রুবতার।
হৃদয়ে ধারণ করি এই পবিত্র বাণী,
জীবনের পথে পেয়ে যাই অনন্ত সান্নিধ্য।
কুরআন নিয়ে হাদিস
এখানে বিশিষ্ট ২০টি কুরআনের আয়াত ও তাদের সংক্ষিপ্ত হাদিস উল্লেখ করা হলো। কুরআন এবং হাদিস একে অপরের পরিপূরক, এবং উভয়ই ইসলামের মৌলিক গ্রন্থ। কুরআনের আয়াতগুলো হাদিস দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয় এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের বিভিন্ন দিককে নির্দেশ করে।
১. সুরা আল-ফাতিহা (১:১)
- আয়াত: “সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টি জগতের প্রতিপালক।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “ফাতিহা হলো কুরআনের সবচেয়ে বড় সূরা, যা সকল রোগ নিরাময়ের উপায়।” (সাহিহ বুখারি)
২. সুরা আল-ইখলাস (১১২:১)
- আয়াত: “বলুন, তিনি আল্লাহ, এক।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “সুরা আল-ইখলাস কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।” (সহিহ বুখারি)
৩. সুরা আল-কাউসার (১০৮:১)
- আয়াত: “আমি আপনাকে দিয়েছি, কাওসার।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “কাওসার হলো জান্নাতে একটি নদী, যা আমার উম্মতের জন্য।” (সহিহ মুসলিম)
৪. সুরা আল-ফালাক (১১৩:১)
- আয়াত: “বলুন, আমি আশ্রয় নিচ্ছি ভোরের প্রভুর নিকট।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) এই সূরাটি এবং সূরা আন-নাস প্রতিদিন সকালে এবং রাতে পড়ার জন্য সুপারিশ করেছেন। (তিরমিজি)
৫. সুরা আল-বাকারা (২:২৫৫)
- আয়াত: “আয়াতুল কুরসি: আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবিত, সবকিছু সংরক্ষণকারী।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “আয়াতুল কুরসি হলো কুরআনের সবচেয়ে মহৎ আয়াত।” (সহিহ মুসলিম)
৬. সুরা আলে ইমরান (৩:৯২)
- আয়াত: “তোমরা কেবল সেই সময়েই কল্যাণ লাভ করবে, যখন তোমরা তোমাদের প্রিয় জিনিসগুলো আল্লাহর পথে দান করবে।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “দান করার সময় সেরা জিনিসটিই দান করতে হবে।” (সহিহ বুখারি)
৭. সুরা আল-মায়িদা (৫:৩২)
- আয়াত: “একজন মানুষকে হত্যা করা গোটা মানবজাতিকে হত্যা করার সমান।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে একজনকে হত্যা করে, তার শাস্তি জাহান্নামে অনন্তকাল অবস্থান।” (তিরমিজি)
৮. সুরা আয-যুমার (৩৯:৫৩)
- আয়াত: “বলুন, হে আমার বান্দারা, যারা নিজেদের ওপর জুলুম করেছে, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আল্লাহ তাঁর বান্দাদের তওবা কবুল করতে পছন্দ করেন।” (সহিহ মুসলিম)
৯. সুরা আল-হুজুরাত (৪৯:১৩)
- আয়াত: “নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত সেই ব্যক্তি, যে তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ধর্মপরায়ণ।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “আল্লাহ তোমাদের চেহারা বা সম্পদ দেখেন না; বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও কাজগুলো দেখেন।” (সহিহ মুসলিম)
১০. সুরা আল-আস্র (১০৩:১-৩)
- আয়াত: “যুগের কসম। নিঃসন্দেহে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “এই সূরা যদি মানুষ বুঝতে পারে, তবে তা তার জন্য পর্যাপ্ত হবে।” (তিরমিজি)
১১. সুরা আন-নাস (১১৪:১)
- আয়াত: “বলুন, আমি আশ্রয় নিচ্ছি মানুষের রবের নিকট।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) সূরা আন-নাসকে প্রতিদিন সকালে এবং রাতে পড়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। (সহিহ মুসলিম)
১২. সুরা আন-নাহল (১৬:৯০)
- আয়াত: “নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচার, সদাচরণ এবং আত্মীয়স্বজনদের অধিকার আদায় করার নির্দেশ দেন।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) এই আয়াতকে ইসলামের সারাংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। (তিরমিজি)
১৩. সুরা আল-কাহফ (১৮:২)
- আয়াত: “তিনি এই কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, যাতে এতে কোনো প্রকার ভুল-ত্রুটি না থাকে।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি সুরা আল-কাহফ জুমার দিন পড়ে, তার জন্য তার দুই জুমার মধ্যবর্তী সময় আলোকিত হয়ে যাবে।” (মুস্তাদরাক)
১৪. সুরা তাওবা (৯:৫১)
- আয়াত: “বলুন, আমাদের যা কিছু ঘটে তা আল্লাহর ইচ্ছায় হয়।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা করা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।” (তিরমিজি)
১৫. সুরা আল-হাশর (৫৯:২১)
- আয়াত: “যদি আমরা এই কুরআনকে কোনো পাহাড়ের উপর অবতীর্ণ করতাম, তাহলে তুমি দেখতেও পাহাড় ভয়ে ভেঙে পড়ে যেত।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “কুরআনের গভীরতা চিন্তা করো এবং তা হৃদয়ে ধারণ করো।” (তিরমিজি)
১৬. সুরা আল-মুলক (৬৭:১৩)
- আয়াত: “তোমরা গোপনে বা প্রকাশ্যে কিছু বলো, নিশ্চয়ই তিনি তোমাদের অন্তরের খবর রাখেন।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি সুরা আল-মুলক প্রতিদিন রাতে পড়ে, তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করা হবে।” (তিরমিজি)
১৭. সুরা আল-ইসরা (১৭:২৩)
- আয়াত: “তোমাদের প্রভু আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করবে না এবং পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার করবে।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “পিতামাতার প্রতি ভালো ব্যবহার জান্নাতের অন্যতম চাবি।” (সহিহ মুসলিম)
১৮. সুরা আল-আদিয়াত (১০০:১)
- আয়াত: “শপথ সেই ঘোড়াগুলোর, যারা শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায় দ্রুতগতিতে ছুটে চলে।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) এই সূরাটি যুদ্ধের প্রস্তুতি এবং সাহসিকতার গুরুত্ব বোঝানোর জন্য উল্লেখ করেছেন। (তিরমিজি)
১৯. সুরা আল-মায়িদা (৫:৮)
- আয়াত: “হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর জন্য দৃঢ়ভাবে ন্যায় প্রতিষ্ঠাকারী হও।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “ন্যায় প্রতিষ্ঠা ইসলামের একটি মূল ভিত্তি।” (সহিহ মুসলিম)
২০. সুরা আন-নাহল (১৬:১২৫)
- আয়াত: “আপনি আপনার প্রভুর পথে মানুষকে জ্ঞান ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান করুন।”
- হাদিস: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “দাওয়াহ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ কাজ, যা আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে নিয়ে যায়।” (তিরমিজি)
এই কুরআনের আয়াতগুলো এবং হাদিসগুলি ইসলামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা এবং জীবনধারা তুলে ধরেছে। প্রতিটি আয়াতের সাথে সংযুক্ত হাদিসগুলো কুরআনের বার্তাকে আরো স্পষ্টভাবে বুঝতে সহায়ক। এই কুরআন নিয়ে ছন্দ – কুরআন নিয়ে কবিতা – কুরআন নিয়ে হাদিস গুলো কেমন লাগলো সেটা কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।